#অণুগল্প
#ছক্কা
✍#ঝিলিক_মুখার্জী_গোস্বামী
অনেক খুঁজে খুঁজে মনের মতো একটা বোর্ড পাওয়া গেছে। ঠিক এইরকমই একটা বোর্ড খুঁজে ফিরছিলাম।
সাপ-লুডো!
-“না ওটা খেলব না।”
-“কেন?”
-“পুট না পড়লে গুটি ঘরেই আটকা থাকে।”
-“ঠিক পড়বে। ট্রাই কর।”
-“সাপের মুখে পড়লে আবার সেই….”
সাপ!
****
অনেক চেষ্টার পর, সেক্টর ফাইভে একটা চাকরি জুটিয়েছি। চাকরির বয়স পাঁচ মাস। শ্যামনগর থেকে ট্রেনে ইঁদুর-বাদুড় ঝুলে শিয়ালদহ হয়ে বাসে স্লিপিং ডান্স করতে করতে পৌঁছে যাই ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং এ।
রোজ যাত্রা পথে মুখোমুখি হই।
কেউ বলে শুভ।
সামনে এলে ফেরাই না।
জিনিসটা পেয়ে গেলেই এক চিলতে হাসি উপহারে জোটে।
পাঁচ মাসে এরকম কক্ষনো হয়নি।
এটাই প্রথমবার।
যাওয়ার সময় চোখে পড়ল না!
অফিস ফেরতা, হলুদিয়া আভা মাখা রাস্তার গ্যাস লাইটের নীচে অপেক্ষারত।
বিষন্ন মনে, পকেট হাতড়ে সরু সদাটে ছোট্ট টিউবলাইটের মত জিনিসটা বের করেছি….
পায়ের সামনে এসেই, শরীরটা পড়ে গেল।
****
-” তুই তাহলে সবুজটা নে।”
-“আমি নীল।”
লাল রঙা কিউবে ছ’টা ডট একসাথে পড়তেই লাফিয়ে উঠলাম।
ছক্কা।
ছক্কা।
আনন্দে ওর মুখের দিকে তাকিয়েই দেখিনি। চোখ জোড়া যেতেই….
মাথাটা স্মল এফের মতো নেমে গেছে। শরীরের কাঁপুনিটা বুঝতে পারলাম। পরম স্নেহে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। ঠিক সেদিনের মতো।
****
ঠিক সময়ে হসপিটালে না পৌঁছতে পারলে কি যে হত!
সাদা চাদরে মোড়া বিছানার উপর ক্লান্ত-রক্তাক্ত শরীরটা দেখে আঁতকে উঠেছিলাম।
জন্ম-মৃত্যু সবই ওনার হাতে।
ওদেরও বাঁচার অধিকার আছে।
নিষ্ঠুর পৃথিবী!
বিষাক্ত সাপের লকলকে জিহ্বার ছোবলে ওর শরীরটা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গিয়েছিল!
বারবার সাপের মুখে পড়ত ওর গুটি টা।
মই এর নাগাল বিশেষ জোটেনি।
****
পরম মমতার সাথে আবেগপূর্ণ গলায় ওর কাছে প্রমিস করেছিলাম, কোনো দিন ওকথাটা মুখেও আনব না।
লুডোর বোর্ড গুটিয়ে দিয়ে সিদ্ধ হস্তে এখন কিস্তিমাত চলছে। ঘরের মধ্যে শোভা পাচ্ছে মেডেল গুলো।
নতুন পরিচয়।
নতুন জীবন।