##নিশিরাতে র গোলাপের পুনরুত্থান
পার্ট -২
✍️✍️✍️কলমে অনিমা
এবার অন্তিক্ষনপুরের রাসের মেলায় বিনোদ ও সাবু উভয়ে উভয়ের বাড়ির বাইরে র লোকেদের নজর বাঁচিয়ে গিয়েছিল মেলা দেখতে।কোচবিহারের মতন অতজাঁকজমকপূর্ণভাবে রাস উৎসব অনুষ্ঠিত না হলেও এখানের মেলাতে পরিদর্শনকারী উৎসাহীদের ভিড় কম নয়। সাবু র হাতটাকে শক্ত করে আপন বাহুতে জড়িয়ে নিয়ে ভিড় ঠেলে বেশ কষ্ট করে মেলাতে ঢুকে পড়ে বিনোদ। সেখানে কত লোকজন,কত ছোট বড় দোকান তাতে নিত্যনতুন সাজের জিনিসের সম্ভার, হাতে গড়া ছোটো বড় শিল্প,, হেঁশেলের টুকিটাকি জিনিস, মুখরোচক কতনা খাদ্য ইত্যাদি নিয়ে মেলা বসেছে । ঘুরে ঘুরে দেখেছিল সাবু বিনোদের হাত ধরে। ধুলোর মধ্যে নাচছিল দর্শকরা ভিড় করে সেসব লোকনৃত্য দেখছে শেষে তাদের অনুপ্রাণিত করার নিজনিজ সাধ্যমত কিছু পয়সা দিচ্ছে ।সাবুর ভারী সাধ হচ্ছিল কাছে গিয়ে তাদের হাত ও পায়ের সঙ্গে কোমরের তাল মেলানো দেখে। বেশি সময় নেই তাদের আবার ফিরতে হবে, বিনোদের তাগাদা পেয়ে তাকে ফিরতে হল। মুখ গোমড়া দেখে কী ব্যাপার? কিছুনা কিছু তো হোয়েছে কি হয়েছে বলো কিছু হোয়নি কিছু হলেও বলব না বলব না বারংবার উচ্চারণের পর অভিমানে ঠোঁট ফোলা নো শিশুর মত নাটকীয় ভঙ্গিমায় বিনোদের থেকে কিছুটা দূরে চলে আসতে যাবে তার খালি পায়ে গোলাপের কাঁটা বিঁধে ও সে উ: করে বসে পড়ে। বিনোদ কী হল কী হল করে টা কাঁটা তুলতে ব্যস্ত হয়ে বসে পড়ে ধুলোমাখা পাখানি কোলে তুলে নেয়। তু আমাকে এত্ত ভালবাসিস তার যন্ত্রণায় বি নোদকে কষ্ট পেতে দেখে অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে সাবু। বকবক বন্ধ কর কাঁটা টা তুলতে দে। বলনা । হুম্ ভালোবাসি তোকে ভীষণ। কিন্তু জান টান দিতে পারব না। ক্যানে ? ভালোবাসার জন্য প্রাণ দিতে রাজি – ফিল্মের নায়কের মুখে কমন এই ডায়লগ চিরকাল ধরে প্রেমিক প্রেমিকার মজ্জায় মজ্জায় প্রবাহমান । নিজেদের কথোপকথনে প্রায়শই উঠে আসা এধরনের সংলাপ চিরাচরিত প্রথা অনুসরণ করার পরই প্রণয় অত্যন্ত প্রগাঢ় হয়ে ওঠে। সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি সুদৃঢ় হয়। বোধকরি সেই সংলাপের খেলাপ কথা শুনে সাবুর চোখে মুখে প্রশ্ন জাগে। আবার প্রশ্ন করছে কেন ? স্বল্প বিদ্রুপের ভঙ্গিতে বলে বিনোদ।প্রাণ দিলে কাছে এসে ভালোটা বাসবে কে শুনি? যা: কি যে বলিস? সবসময় শুধু আমাকে শরমে ফেলে দিস! এখন শরম লাগছে, দেখি দেখি লজ্জায় লাল হওয়া মুখটাকে দেখি, এতক্ষণ ধরে আমার হাতে হাত দিয়ে ঘোরাঘুরি করলে তখন লজ্জা করেনি? হু এই বলেই বিনোদ ওর হাতে ঢাকা মুখ একটু জোর করে খুলে অপলক চেয়ে থাকে একটু আগে র কেনা মাটির রং করা কানের দুখানি দুল পরে তাকে কতটা সুন্দর লাগছে।কোনো কুমারের টুলিতে তৈরি অপরূপ সুন্দর মাটির প্রতিমা যেন। দীঘির মতো সুগভীর টলটলে দুটো চোখ, টানা টানা সে চোখে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে।কালো ঘন শক্ত চুল আচ্ছাদিত রয়েছে উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা সাবুর মাথার উপর। সাবু বিনোদের কাছে থাকলে খুব কমই চোখ ফেরাতে পারে সে এই মোহময়ীর থেকে। একটু ঝুঁকে পড়ে তার পুরু ঠোঁটের উপর। ঝুপ করে কিছু পরে যাওয়ার আওয়াজ হতেই। সম্বিত ফিরে আসে সাবু ও তার মিনসের । আসলে তারা একটি ত্রি পলের ভেতরে খাদ্যসামগ্রী র মধ্যে এসে বসেছিল। অবশ্য দোকানদারের অনুমতি নিয়ে ই তাদের এখানে বসা। দোকানি কে তারা মিঞা – বিবি অনেক দূর থেকে মেলা দেখতে এসেছে এবং তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার প্রমাণ স্বরূপ সাবুকে দেখিয়ে তাদের ক্লান্তি দূর করার জন্য একটু বসতে চায় বলে অনুরোধ জানালে পর, দোকানি তাদের এ জায়গাটা দেখিয়ে দেয়।
সাবু চোখ তুলে দেখে একটা সাদা বেড়াল কিছু খাবারের খোঁজে ঢুকেছিল বোধহয় ত্রিপলে রাখা বড় বর কড়াইয়ের থেকে গায়ে কালি লেপে এসেছে। এই দেখে সাবু হা হা হা হা করে হাসতে থাকে।